আগাছা দমন ও নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

এসএসসি(ভোকেশনাল) - শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

জলজ উদ্ভিদ পানিতে সূর্যালোক প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে ফলে পানিতে অক্সিজেনের অভাব হয়। তাই চিংড়ি চাষের পুকুরে আগাছা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে না রাখলে খুব অল্প সময়েই একটি পুকুর অনাবাদী বদ্ধ জলাভুমিতে পরিণত হতে পারে। পুকুরের আগাছা দমন ও নিয়ন্ত্রণ চারটি উপায়ে করা যায়। যথা-

ক) কায়িক শ্রম পদ্ধতি: পুকুরের যাবতীয় আগাছাকে দা বা কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলে হাত দিয়ে তুলে ফেলা যায়। কখনো কখনো পুকুরে দড়ি টেনে আগাছার শিকড় আলাদা করে পরে টেনে তোলা যায়।

খ) যান্ত্রিক পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে জলজ আগাছা নিয়ন্ত্রণ বেশ ব্যয়বহুল ও শ্রমসাধ্য। স্টিল ক্যাবল দিয়ে শেওলা ছাড়া সব ধরনের জলজ আগাছা পরিষ্কার করা যায়। পক্ষান্তরে উইডস' দিয়ে কেবল নরম জাতীয় নিমজ্জনশীল উদ্ভিদ দমন করা যায়।

গ) জৈবিক পদ্ধতি: জলজ আগাছা দমনের জন্য জৈবিক পদ্ধতি অধিক নিরাপদ, কার্যকর ও খরচ অনেক কম। এই পদ্ধতিতে আগাছা দমনের জন্য কোনো রাসায়নিক দ্রব্য বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় না। এই পদ্ধতিতে আগাছা দমনের জন্য রাজহাঁস ও পাতিহাঁস এবং গ্রাসকার্প, তেলাপিয়া, সরপুঁটি প্রভৃতি মাছ ব্যবহার করা যেতে পারে।

ঘ) রাসায়নিক পদ্ধতি: পুকুরে চিংড়ি থাকা অবস্থায় কোনো প্রকার রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করা উচিত নয়। এই পদ্ধতিতে আগাছা দমনের পূর্বে কোনো মৎস্যবিজ্ঞানী বা নিকটবর্তী মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। কপার সালফেট, সোডিয়াম আরসেনাইট, ২-৪ ডি, এ্যাকুয়াথল গ্লাস প্রভৃতি রাসায়নিক পদার্থ বিভিন্ন প্রকার জলজ আগাছা দমনে ব্যবহার করা হয়।

ঙ) সার প্রয়োগ পদ্ধতি: পুকুরে ডুবন্ত উদ্ভিদ থাকলে বেশী পরিমাণ অজৈব সার প্রয়োগ করে তা দমন করা যায়। পুকুরে যদি ডুবন্ত উদ্ভিদ যেমন- নাজাজ থাকে তাহলে প্রতি শতাংশে ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করলে ২-৩ দিনের মধ্যে পুকুরে সবুজ স্তরের সৃষ্টি হয়। ফলে সূর্যোলোক না পাওয়ায় অল্প কয়েক দিনের ভেতর নাজাজ মারা যায়।

Content added By
Promotion